সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

স্বচ্ছ কাচে রঙিন ভুবন: কীভাবে শুরু করবেন? কোথায় ভর্তি হবেন? কেমন উপার্জন?

- বদরুল আলম শাওন

মানুষের রুচি পরিবর্তনশীল। সর্বদা নতুনত্বের দিকে ঝোক থাকে আমাদের। এই ধরুণ, কিছুদিন আগেও আমরা ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে কাঠের আসবাবপত্রের উপর কাঠের তৈরী নকশা এবং ধাতব বস্তু ব্যবহার করতাম। তবে এখন কাচের তৈরী জিনিসের ব্যবহার বহুলাংশে বেড়ে গেছে। ফলে গ্লাস পেইন্টিং এর উপর মানুষের চাহিদা বেড়ে গেছে। পেশা হিসেবে বেছে নিতে পারেন এই সম্ভাবনাময় কর্ম ক্ষেত্রটিকে।

গ্লাস পেইন্টিং এর কাজ আমাদের দেশে সর্ব প্রথম শুরু করে চায়নার শিল্পীরা। এরপর ২০০২ সালের দিকে বাংলাদেশের শিল্পীরা গ্লাস পেইন্টিং শুরু করে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের শিল্পী সুদর্শন বাছার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রফেসর স্বপন কুমার সিকদার যৌথভাবে সর্বপ্রথম এই কাজের উদ্যোগ নিয়েছিলেন।

কীভাবে শুরু করবেন:

প্রথমে যে নকশাটি নির্বাচন করেছেন তার ছাঁচটি প্লেক্সি গ্লাস কিংবা কাচের নিচে বসিয়ে নিন। এর পর নকশা করার সুবিধার জন্য স্কচটেপ দিয়ে আটকে নিন। এরপর ছাঁচের ওপর কাচটি বসানো হয়ে গেলে কালো মার্কার দিয়ে ছাঁচের নকশা অনুযায়ী একটা আউটলাইন তৈরি করুন। প্রত্যেক রেখার অগ্রভাগগুলো যাতে একটি আরেকটির সঙ্গে ভালোভাবে জোড়া লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এরপর একটি বোতলে রঙ ঢেলে মুখে নজল লাগিয়ে নিন। বোতল থেকে খুব আস্তে আস্তে রঙ দিয়ে আউটলাইনের ভিতর রঙ মেশান। তবে খেয়াল রাখতে হবে যে, যাতে কোনোভাবেই রঙ আউটলাইনের বাইরে চলে না যায়। যদি কোনভাবে রঙ আউটলাইনের বাইরে ছড়িয়ে পড়ে তবে   দ্রুত অপসারণ করুন। রঙ ঢালার পর যদি রঙের বুদবুদ থেকে যায় কাচের ওপর, তবে টুথপিক দিয়ে বুদবুদটি ফুটো করে দিন। বুদবুদসহ নকশাটি শুকিয়ে ফেললে এটি দীর্ঘস্থায়ী নাও হতে পারে। এবার পুরো নকশাটিতে রঙ করার পর শুকিয়ে নিন। যদি রঙ পুরোপুরি না শুকায় তবে সেটি রোদে রেখে দিন কিছুদিন। 

 কোথায় ভর্তি হবেন:

পেশাদার হিসেবে গ্লাস পেইন্টিং এ ক্যারিয়ার গড়তে হলে ড্রইং ও পেইন্টিং এর উপর দক্ষ হতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনি দেশের পাবলিক ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চারূকলা বিভাগে ভর্তি হতে পারেন। তবে ভর্তি হতে হলে অবশ্যই আপনাকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বা এর সমমান হতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর চাহিদা অনুযায়ী একাডেমিক রেজাল্ট থাকতে হবে। এছাড়া প্রাইভেট টিউটরের মাধ্যমে ড্রইং ও পেইন্টিং শিখতে পারেন। এগুলো ছাড়াও গ্লাস পেইন্টিং শিখতে পারেন ইউটিউব থেকে ভিডিও দেখে।

কেমন উপার্জন: 

গ্লাস পেইন্টার হিসেবে কর্মক্ষেত্রে যোগ দেয়ার শুরুতে উপার্জন করতে পারেন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। পরবর্তিতে চাকরীর মেয়াদ ও দক্ষতার ভিত্তিতে উপার্জন কয়েকগুন বেড়ে যেতে পারে। এছাড়া করতে পারেন ফ্রীল্যান্স আর্ট ওয়ার্কি। তবে এটি একটু ব্যয়বহুল।

Some Video Guide about glass painting: 

Glass color set review and BD price. ( glass painting)
Website Link: https://khelaghortoys.com 

How to make a Magic Mug at home - Very Simple

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

গ্লাস পেইন্ট কি অনান্য পেইন্ট করার মতই? নাকি এর জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ নিতে হয়? বাসায় যদি নিজেই গ্লাস পেইন্ট করতে চাই তাহলে কিভাবে করব আর কি কি লাগবে?

গ্লাস পেইন্ট তৈরি করতে প্রয়োজন হয় কাঁচ ও কাঁচে ব্যবহারের উপযোগী রং।গ্লাস পেইন্ট করার জন্য কাচ কিনতে পাওয়া যাবে নিউ মার্কেট, চন্দ্রিমা মার্কেট, হাতিরপুল, সায়েন্সল্যাবের মোড়ে। এছাড়াও ছবি বাঁধাই করে এমন দোকানেও কাচ কিনতে পাওয়া যায়। কাচ বিক্রি হয় ফুট হিসেবে। প্রতি ফুটের দাম ৮০-১২০ টাকা। গ্লাস পেইন্ট করার রং কিনতে পাওয়া যায় স্টেশনারি দোকানগুলোতে। ব্লক-বাটিকের রং বিক্রি করে এমন দোকানেও এই রং কিনতে পাওয়া যায়। দাম নেবে ১৮০-১৫০০ টাকা। বিভিন্ন রঙের আউট লাইনারের দাম ৯০-১৫০ টাকা। পদ্ধতি : যে নকশাটি গ্লাস পেইন্টে করবেন সেটা একটা সাদা কাগজে এঁকে নিন। এরপর কাগজটির উপর কাচ রেখে আউট লাইনার দিয়ে নকশাটি কাচে এঁকে ফেলুন। লাইনার শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এরপর নকশায় রং করুন। একটি রং শুকিয়ে যাওয়ার পর আরেকটি রং ব্যবহার করুন। নয়তো দুটি রং মিশে জিনিসটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। রং করা হয়ে গেলে ভালোভাবে শুকান। পেইন্ট করা কাঁচটি বাঁধাই করে ঘরের দেয়াল সাজাতে পারেন। ব্যবহার করতে পারেন জানালার শার্সি হিশাবে। এছাড়াও গ্লাস পেইন্ট করা সম্ভব কাঁচের নানা রকম বাসনকোসনেও। খাবার প্লেট থেকে শ...

রঙের ছোঁয়ায় নতুন রূপে...

স্প্রে করার সময় মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস পরে নেওয়া ভালো। মডেল: সামিয়া, ছবি: খালেদ সরকার নিত্যদিনের প্রয়োজনে কত কিছুই না ব্যবহার করতে হয়। নিত্য ব্যবহারের ছোটখাটো এমন অনেক জিনিসই থাকে, যেগুলো একটা নির্দিষ্ট সময় পর ফেলনা তালিকায় পড়ে যায়। অথবা দীর্ঘদিন ব্যবহারে মলিন হয়ে পড়ে। চাইলে প্রায় নষ্ট হয়ে যাওয়া জিনিসগুলোই ব্যবহার করতে পারবেন। ফেলনা জিনিসগুলো থেকেই কিন্তু ঘর সজ্জার অনেক আকর্ষণীয় বস্তু তৈরি করা যেতে পারে। দরকার একটু রং লাগানো।  ফেলনা জিনিসের নানা ব্যবহার ঘরের ব্যবহার করা জিনিসটি পুরোনো হয়ে গেলেই যে ফেলে দিতে হবে, তা কিন্তু নয়। অনেক জিনিস ফেলতেও মায়া লাগে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘ফেলনা মানেই কিন্তু সব সময়ে বাতিল নয়। আর এ ক্ষেত্রে গুটি কয়েক অব্যবহার্য জিনিস আপনি বাছাই করতে পারেন ঘর, সিঁড়িঘর কিংবা ছাদের সৌন্দর্যের জন্য।’ আব্দুস সাত্তার জানিয়েছেন কোন জিনিসগুলো বাছাই করতে পারেন। মাটির পুরোনো পাত্র শখ করে মাটির সরাটি কিনেছিলেন, কিন্তু কোণের দিকে একটু ভেঙে গেল। কিংবা পুরোনো ফুলের ছোট টব, ছো...

কাচের রঙিন নকশা

            নকশা করা অন্দরের ভেতরের দরজা দেখে হয়তো চোখ জুড়িয়ে যাবে। কি সুন্দর আকা-বাকা লতা-পাতা, ফুল, প্রজাপতির নকশা কিংবা হয়তো তুলির আচড়ে সুন্দর করে গড়ে তোলা কোনো অবয়ব। চোখ তো জুড়াবে বটেই, সঙ্গে অন্দরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলবে কয়েক গুণ বেশি। শুধু দরজা-জানালা কিংবা টেবিলের ওপরের কাচটিই নয়, তুলিতে রাঙিয়ে নিজের মতো নকশা করতে পারেন কাচের কিংবা মসৃণ যে কোনো কিছুর ওপর। টেবিল ল্যাম্প, আয়না, জল খাবার গ্লাস, যা-ই হোক না কেন নিজের মনের মতো করে সাজিয়ে ফেলতে পারেন নান্দনিক সব নকশায়। কিংবা পছন্দের কোনো চরিত্রকে রূপ দিতে পারেন কাচের ওপর রঙ-তুলির সাহায্যে। সেটি দেখতে যেমন হবে ব্যতিক্রমী ও দৃষ্টিনন্দন, পয়সাও বাচবে অনেকখানি           প্রয়োজনীয় উপকরণ: স্বচ্ছ স্কচটেপ; বাজারে গ্লাস পেইন্টিং কালার পাওয়া যায়, সেগুলো থেকে পছন্দসই রঙ বেছে নিন; কালো রঙের মার্কার পেন্সিল, যা দিয়ে আউটলাইন তৈরি করা সম্ভব; প্লেক্সি গ্লাস; নকশা তৈরির জন্য পছন্দসই ছাচ; টুথপিক বা চিকন কোনো কাঠি।           কার্যপদ্ধতি: প্রথমে আপনার পছন্দ করা ন...