সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

রঙের ছোঁয়ায় নতুন রূপে...

নিত্যদিনের প্রয়োজনে কত কিছুই না ব্যবহার করতে হয়। নিত্য ব্যবহারের ছোটখাটো এমন অনেক জিনিসই থাকে, যেগুলো একটা নির্দিষ্ট সময় পর ফেলনা তালিকায় পড়ে যায়। অথবা দীর্ঘদিন ব্যবহারে মলিন হয়ে পড়ে। চাইলে প্রায় নষ্ট হয়ে যাওয়া জিনিসগুলোই ব্যবহার করতে পারবেন। ফেলনা জিনিসগুলো থেকেই কিন্তু ঘর সজ্জার অনেক আকর্ষণীয় বস্তু তৈরি করা যেতে পারে। দরকার একটু রং লাগানো। 
ফেলনা জিনিসের নানা ব্যবহার
ঘরের ব্যবহার করা জিনিসটি পুরোনো হয়ে গেলেই যে ফেলে দিতে হবে, তা কিন্তু নয়। অনেক জিনিস ফেলতেও মায়া লাগে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘ফেলনা মানেই কিন্তু সব সময়ে বাতিল নয়। আর এ ক্ষেত্রে গুটি কয়েক অব্যবহার্য জিনিস আপনি বাছাই করতে পারেন ঘর, সিঁড়িঘর কিংবা ছাদের সৌন্দর্যের জন্য।’ আব্দুস সাত্তার জানিয়েছেন কোন জিনিসগুলো বাছাই করতে পারেন।
মাটির পুরোনো পাত্র
শখ করে মাটির সরাটি কিনেছিলেন, কিন্তু কোণের দিকে একটু ভেঙে গেল। কিংবা পুরোনো ফুলের ছোট টব, ছোট কলসি অথবা হতে পারে ঘরসজ্জার কোনো শোপিস। দীর্ঘদিনের ব্যবহারে রংটাও কেমন যেন মলিন হয়ে পড়ে। তাই চাইলেই পোস্টার কালার অথবা ফ্যাব্রিক পেইন্ট ব্যবহার করে নতুন রূপটা ফিরিয়ে আনতে পারেন।
প্লাস্টিকের জিনিসপত্র
প্লাস্টিকের বোতল, ওয়ান টাইম গ্লাস, বড় কোনো পাত্র দিয়ে রকমারি সরঞ্জাম তৈরি করে নেওয়া যায় মোমদানি ও ফুল রাখার পাত্র। তবে এ ক্ষেত্রে রং বাছাই করতে হবে খুব সাবধানে। এমনটাই মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নিশাত মিম। কেননা প্লাস্টিকের ওপর এমনিতেই রং সহজে বসতে চায় না। এ জন্য স্প্রে পেইন্ট ব্যবহার করার কথা বলেন তিনি।
টিনের কৌটা
এ ধরনের পাত্র রং করার সময় একটু সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার। কেননা টিনের কৌটায় সহজে রং বসতে চায় না, সেটা যেকোনো ধরনের রংই হোক না কেন। তবে পোস্টার কালার এবং স্প্রে পেইন্টকেই এ ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিয়েছেন নিশাত। তিনি বলেন, ‘ধরা যাক কনডেন্সড মিল্কের কোনো কৌটায় আপনি রং করবেন। সে ক্ষেত্রে প্রথমেই টিনের পাত্রটিকে ভালোমতো পরিষ্কার করে শুকিয়ে নিন। এরপর সাদা রঙের স্প্রে পেইন্ট দিয়ে বেজ রং করে নিলে কোটিং ভালো হয়।’ তার ওপর আপনি অন্য যেকোনো রঙের নকশা বা ডিজাইন করে নিতে পারেন। ব্যস, এভাবেই তৈরি করে নিতে পারেন কলমদানি, কিংবা মানিপ্ল্যান্ট রাখার ছোট্ট পাত্র।
কাচের পাত্র
আমরা যে কাচের ওপর বিভিন্ন মোটিফ দেখি, সেটা কিন্তু করা হয় গ্লাস পেইন্ট দিয়ে। চাইলে স্প্রে পেইন্টও ব্যবহার করা যেতে পারে। আব্দুস সাত্তার বলেন, সুবিধার জন্য আজকাল বাজারেই রেডিমেড গ্লাস পেইন্ট পাওয়া যাচ্ছে। আবার চাইলে ঘরে বসেই আপনি এই রং তৈরি করে নিতে পারবেন। কীভাবে? ইঙ্ক বাইন্ডার, জিঙ্ক অক্সাইডসহ বিভিন্ন উপকরণ রঙের সঙ্গে মিশিয়ে নিলেই বানিয়ে নেওয়া যায় এই গ্লাস পেইন্টিং রং। এবার এই রংটাকে নষ্ট হয়ে যাওয়া বাল্ব কিংবা আয়নায় বসিয়ে নিজ পছন্দের জিনিসটা বানিয়ে ফেলুন।
কাঠের যত ফেলনা জিনিস
কাঠ এমন একটি উপকরণ, যার ওপর যেকোনো ধরনের রং অনায়াসেই ব্যবহার করা যায়। পোস্টার কালার থেকে শুরু করে ফ্যাব্রিক কালার—সবই এতে মানানসই। চাইলে কাঠের ফেলনা জিনিসটির সঙ্গে তারকাঁটা কিংবা কাপড় পেঁচিয়ে ফুল তৈরি করে নিতে পারেন। আবার এই কাপড়ের ওপর রঙিন কয়েকটি বোতামও না হয় বসিয়ে দিলেন।
দরকারি কিছু বিষয়
ফেলনা জিনিসটি কোন উপকরণ দিয়ে তৈরি, সেটার ওপর রং নির্বাচন করুন। আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘স্প্রে পেইন্ট সবচেয়ে ভালো বসে যায় কাঠ, কাচ এবং মাটির জিনিসের ওপর।’
ফেলনা জিনিসটি আকৃতিতে যদি ছোট হয়, তাহলে সুবিধার জন্য একটি হোল্ডার ব্যবহার করুন।
রং করার আগে মেঝেতে কিছু বিছিয়ে নিন, এতে অন্য কোথাও রং লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে।
টিনের কৌটায় রং করার সময় প্লাস্টিকের রবার লাগিয়ে নিতে পারেন। যাতে বাইরের কোনো অংশে রং না লেগে যায়। রবার তুলে ফেলার পর ভিন্ন এক ধরনের ডিজাইনও তৈরি হবে।
স্প্রে পেইন্ট করার সময় মুখে একটি মাস্ক পরে নেওয়াই ভালো।
কথা হয় নিউমার্কেটের মডার্ন স্টেশনারির বিক্রেতা রফিকুল আলমের সঙ্গে। তিনি জানান, ‘যেকোনো রংই হোক না কেন, বেজ কালার এবং কোটিং ভালো হতে হবে। স্প্রে পেইন্টের ক্ষেত্রে এ বিষয়টিকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া উচিত।’ রং স্প্রে করার সময় হালকাভাবে করতে হবে। নতুবা পরে রং উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর একই সঙ্গে পাত্রের সব জায়গায় রং সমানভাবে লাগে না।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

৩০টি সেরা আকাঁ ছবি বিক্রির সাইট

কিছু দিন আগেও পৃথিবীতে প্রচুর পরিমাণে চিত্রশিল্পী ছিলো যারা নতুন নতুন ভাল সব ছবি আমাদের সকলকে উপহার দিতো। বতমার্নে কিছু শখের চিত্র শিল্পী আছে এই দেশে । বতমার্নে চিত্র আকাঁর চেয়ে তোলাটা বেশি জনপ্রীয়। যেটা ক্যামেরা দিয়ে করা হয়, বতমার্নে ক্যামেরার দাম খুবেই কম হওয়াতে খুব সহজেই সবাই ক্যামেরা ব্যবহার করতে পারছে। কিছু সৌখিন লোক আছে যারা এখন শুধুই নিজের ইচ্ছায় ছবি আকেঁন এবং অন্যকে উৎসাহ দেন। আজকে তাই আমি দেখাবো এই সৌখিন ছবি গুলো কোন মাকের্টপ্লেজে বিক্রি করবেন। ৩০টি সেরা সাইটের কথা আজ বলবো যেখানে আপনার আকাঁ সেরা সৌখিন ছবি বিক্রির জন্য দিবেন, যেহেতু ৩০টা সাইট তাই পোষ্টটি একটু বড় হবে। আশা করি সাবাই পড়বেন। FineArtAmerica.com এটি চিত্র শিল্পীদের সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী যায়গা। এখানে অনলাইন মাকের্টপ্লেস তৈরি, ক্রয় ও বিক্রয় করতে পারবেন। তাছাড়া সেখানে আরো আছে canvas prints, acrylic prints, framed prints, fine art prints এবং আরো অনেক কিছু। এটি একটি বিশ্ব বিখ্যাত আর্ট এবং ফটোগ্রাফি আর চিত্রশিল্পীদের জায়গা। Redbubble.com এটি একটি অনলাইন কমিউনিটি এবং আর্ট গ্যালারি। এ

ইচ্ছে মতো চলুক গ্লাস পেইন্টিং!

গ্লাস পেইন্টিং করার নতুন সাধ হয়েছে যাদের, কাঁচের গায়ে আঁকিবুকি করার চিন্তা করছেন কিন্তু উপায় জানা নেই, তারা উপায় পাবেন এই লেখায়। পেইন্ট করার মূল ধাপগুলো দেখে নিয়ে তারপর ইচ্ছে মতো গ্লাস পেইন্টিং চলুক। যা যা লাগছে- স্বচ্ছ কাঁচের গ্লাসশিট। ঘরে থাকা কাঁচের কোন পাত্রও হতে পারে। ওয়াইন গ্লাস, ঘড়ির কাঁচ এসব কিছু চলতে পারে। কাগজ লাগতে পারে, যদি নকশাটা প্রথমে কাগজে এঁকে নিয়ে তার উপর কাঁচ বসিয়ে আউটলাইন করেন।  হরেক রকম রং তো লাগছেই, নকশা আউটলাইন করার জন্যও একটি আলাদা রং লাগবে। এটা হতে পারে কালো, কিংবা সোনালি-রূপালি।  তুলি লাগতে পারে, যদি আপনি ব্যবহার করতে চান। বাজারে হরেক রকম রং সহজলভ্য, নিজের সুবিধা বা পছন্দ মতন বেছে নিতে পারেন। গ্লাসশিট ধুয়ে মুছে ভালো মতন শুকিয়ে নিন কাজের শুরুতেই। ময়লা কাঁচে আঁকলে জিনিষটা বরং নষ্টই হবে। গ্লাসে নকশার আউটলাইন আঁকতে হবে এবার। কালার টিউবে চিকন নজল ব্যবহার করবেন আউটলাইন করার জন্য। কাগজ থেকে ছাপ নিয়ে আঁকতে চাইলে নকশা আঁকা কাগজের টুকরোটা গ্লাসের নিচে রাখুন। এতোটুক কাজ হবার পর কাঁচের টুকরোটা শুকোতে দিন। এই রং শুকিয়ে যেতে সময় নেবে তিন-চার ঘ

Watercolor Landscape Painting- nature in Hindi/Bengali/English